ঢাকা, সোমবার, ২০ মে, ২০২৪

ফরিদপুরে মাছ চুরির মামলায় গ্রেপ্তার জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার

ফরিদপুরে মাছ চুরির মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার এম এ সালাম লালকে (৭২)। শুক্রবার (৪ ডিসেম্বর) বেলা পৌনে ১১টার দিকে শহরের ভাটিলক্ষ্মীপুরে নিজ বাড়ি থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। শুক্রবার বিকেলে এম এ সালামকে ফরিদপুর কোতোয়ালি থানায় নেওয়া হয়। সারা রাত কোতোয়ালি থানায় রাখার পর শনিবার দুপুরে জেলার মুখ্য বিচারক হাকিমের আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।এম এ সালাম শহরের ভাটি লক্ষ্মীপুর মহল্লার মৃত রমজান ফকিরের ছেলে। তিনি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের তিনি কমান্ডার ছিলেন। এ ছাড়া ফরিদপুর পৌরসভার কমিশনার নির্বাচিত হয়েছিলেন।


এম এ সালামের মেয়ে এলিজা আক্তার জানান, হয়রানিমূলক মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে তার বাবাকে। জাতির জন্য যুদ্ধ করে তাকে আজ মাছ চুরির মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। এটি জাতির জন্য একটি লজ্জাজনক উদাহরণ হয়ে থাকবে। বিজয়ের মাসে বীর যোদ্ধাকে এভাবে অপমান করবে ভাবতে পারিনি।


এম এ সালামকে গ্রেপ্তারের সত্যতা নিশ্চিত করে ফরিদপুর দুই নম্বর পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক মো. রাকিবুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, শহরের সিএন বি ঘাট এলাকার হাশেম ফকির গত ১৩ জুলাই একটি মামলা করেন এম এ সালামের নামে। ওই মামলার এজাহার অনুযায়ী হাশেম সিঅ্যান্ডবি ঘাট এলাকায় একটি পুকুরে মাছের চাষ করেছিলেন। ওই মাছ চাষ করার জন্য হাশেমের কাছে দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন এম এ সালাম। চাঁদার টাকা না দেওয়ায় এম এ সালাম তার লোকজন নিয়ে ওই পুকুরের সব মাছ নিয়ে যায়।


তিনি বলেন, এ মামলায় এম এ সালামকে গ্রেপ্তার করা হলেও তার বিরুদ্ধে টেপাখোলা গরুর হাটে চাঁদাবাজির অভিযোগ আরেকটি মামলা তদন্তপ্রাপ্ত আসামি হিসেবে নাম রয়েছে।


এম এ সালামের গ্রেপ্তারের বিবরণ দিয়ে তার মেয়ে এলিজা আক্তার জানান, শরীর অসুস্থ থাকায় শুক্রবারে বাবা তখন বাড়িতে ঘুমাচ্ছিলেন। ওই সময় পুলিশ সদস্যরা বাড়িতে এসে ‘পুলিশ সুপার সাহেব কথা বলবেন’- এ কথা বলে বাবাকে নিয়ে যান। পরে সারা দিন তাকে দুই নম্বর পুলিশ ফাঁড়িতে বসিয়ে রাখা হয়। সন্ধ্যার দিকে বাবাকে কোতোয়ালি থানায় নেওয়া হয়। সেখানেই তাকে সারা রাত বসিয়ে রেখে আদালতে পাঠানো হয়।


তিনি বলেন, আমার বাবা একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। এ দেশের জন্য তিনি যুদ্ধ করেছেন। তাকে একটি হয়রানিমূলক মামলায় এভাবে নাজেহাল করার এ ঘটনাটি জাতির জন্য একটি লজ্জাজনক উদাহরণ হয়ে থাকবে। আমি জাতির কাছে এর বিচার চাই।


ফরিদপুর সদর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার শামসুদ্দীন ফকির এ ঘটনার নিন্দা জানিয়ে বলেন, এম এ সালাম একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার। ৭২ বছর বয়সী একজন বৃদ্ধ। হার্টে রিং পড়ানো। প্রেশারসহ আরও অনেক শারীরিক সমস্যা রয়েছে তার। ইচ্ছাকৃতভাবেভাবে হয়রানি করার জন্য তাকে নানা কেস দিয়ে নাজেহাল করা হচ্ছে। এটা কোন ধরনের রাজত্ব বুঝতে পারছি না। ৭২ বছর বয়সী একজন ব্যক্তি, যিনি মুক্তিযোদ্ধা ও অসুস্থ ব্যক্তি একজন সাবেক কমিশনার তার পক্ষে মাছ চুরির অপবাদ কতটা গ্রহণযোগ্য হতে পারে! তিনি বলেন, রোববার আমরা মুক্তিযোদ্ধারা মুক্তিযোদ্ধা সংসদে বসে আলোচনা করে এ ব্যাপারে আমাদের করণীয় নির্ধারণ করবো।

ads

Our Facebook Page